গণমাধ্যমের সাথে আলোচনা করে কমিশন করা হবে -তথ্য উপদেষ্টা
গণমাধ্যমকে ঢেলে সাজানো হবে। একটা সংস্কার কমিশন করে তারপরে সেটা কমিশনে রূপান্তর করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনাকালে তথ্য উপদেষ্টা মো: নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, নীতিমালাগুলো এমনভাবে তৈরি করা হবে, যেন গণমাধ্যমগুলো স্বাধীন গণমাধ্যম হিসেবে চলতে পারে এবং অবশ্যই স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিভিন্ন প্রকল্পের অভিযোগের বিষয়ে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, সকল প্রকল্পের একটা রিভিউ কমিটি করা হয়েছে। যেখানে দুর্নীতির অভিযোগ আছে সেগুলো তদন্ত করা হবে। তিনি আরো বলেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে সমস্ত কমিটি ছিল, সেগুলোকে বাতিল করে পুনর্গঠন করার কাজ চলছে।
বিভিন্ন নীতিমালার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, যে ধারাগুলো নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে, সেই ধারা গুলো সংশোধন করে হবে; নাকি পুরো আইনটাই বাতিল করা হবে, তা যাচাই-বাছাই পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো আইন যেন গণমাধ্যমের বাকস্বাধীনতার সাথে সাংঘর্ষিক না হয়, সেটা খেয়াল রাখা হবে।
তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, গুমের জন্য তদন্ত কমিশন করা হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে সাংবাদিকদের যে হয়রানিগুলো হয়েছে, সেটা বিবেচনা করা হবে। একইসাথে ১৬ বছর ধরে যে মামলাগুলো ছিলো, সেগুলো তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করা হবে। সাংবাদিকদের হয়রানি ও মামলার বিষয়ে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ আরো বলেন, বিভিন্ন জায়গায় সাংবাদিকদের নামে মামলা করা হচ্ছে। নিরপরাধ কোনো সাংবাদিক যেন ভুক্তভোগী না হয় সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া আছে। সুস্পষ্ট প্রমাণ এবং অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত করে মামলা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু মামলার ঘটনা ঘটেছে, যা সমর্থনযোগ্য নয়।
সরকারের জায়গা থেকে পুলিশকে আরো বেশি কর্মতৎপর করতে চেষ্টা করা হচ্ছে এবং আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে পুলিশ এবং প্রশাসনকে সহায়তা করার অনুরোধ জানিয়েছেন উপদেষ্টা। বিগত সরকারের শাসনামলের ১৬ বছরে পুলিশ এবং প্রশাসনকে জনগনের বিরুদ্ধে দাড় করানো হয়েছে এবং দুর্নীতিগ্রস্ত করা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে পুলিশ এখনো আত্মবিশ্বাসের সাথে দাঁড়াতে পারছে না এবং আইন-শৃঙ্খলার ব্যাহত হচ্ছে। পুলিশদের বিভিন্ন ক্ষোভের বিষয় উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ষোল বছর তাদের অন্যায়ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে এবং আবার যেন তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা না হয় বা বিরোধী দল দমনে অথবা আন্দোলনে ব্যবহার না করা হয় সেই জন্য পুলিশ স্বায়ত্তশাসন চাচ্ছে,
সংশোধন চাচ্ছে।
পুলিশ বাহিনী থেকে প্রস্তাবনা এসেছে এবং কমিশন এই কাজটি করবে। আন্দোলনের পুরা সময়টায় পুলিশই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্তের শিকার হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের একটা রাষ্ট্রীয় বাহিনী কখনোই জনগণের বিপক্ষে যেন আর দাঁড়াতে না পারে, সে বিষয়ে নীতিমালা করা হবে এবং কমিশন সে প্রস্তাবনা দেখবে। একইসাথে পুলিশ যেন তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে সেজন্য পুলিশকে সবরকমের সহায়তা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য উপদেষ্টা।
ব্রিফিংয়ের সময় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মোঃ সামসুল আরেফিন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ড. মোঃ মুশফিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন