ছাগলই বিশাল সম্পত্তির ইতিবৃত্ত বের করে দিল রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের
মুশফিকুর রহমান ইফাত। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে। ঈদের জন্য এক ছাগল ১২ লাখ টাকা দাম করে ১ লাখ টাকা অগ্রীম দিয়ে ছাগল কেনার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে আলোচনায় এসেছে।
ছাগল কিনে আলোচনায় আসা ইফাত ছাগলের পাশাপাশি আরও চারটি গরু কিনেছেন ৩৭ লাখ টাকায়। সব মিলিয়ে ৫২ লাখ টাকায় কোরবানি দিচ্ছেন এমন প্রচার হয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইফাত সাদেক এগ্রো থেকে ২৩ লাখ টাকায় ছাগল ও একটি গরু ক্রয় করেছেন। বাকি ৩ গরুর বাজার মূল্য ২৬ লাখ টাকা। তবে এই কর্মকর্তার ছেলে কেবল এবারই নয়, গেল বছরও কোরবানিতে ক্রয় করেছিলেন ৬০ লাখ টাকার পশু। যা নিশ্চিত করেছেন তাদের কাছে বিক্রি করা এক বিক্রেতা। এতো টাকায় কোরবানি পশু কিনলেও এর আগে আলোচনায় আসেননি তিনি। এবার ভাইরাল ছাগল কিনে ভাইরাল হন মুশফিকুর রহমান ইফাত। তবে বিপাকে পড়েছেন তার বাবা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমান।
সাদেক এগ্রো থেকে ক্রয় করার পর প্রথমে ছাগলটি ধানমন্ডির ৮ নাম্বার সড়কের ৪১/২ নম্বর বাসা ইমপেরিয়াল সুলতানা ভবনের নীচ তলায় রাখেন। এরপর সাক্ষাৎকারের জন্য যাওয়া হলে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ছাগলটি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হলে মতিউর রহমান তাঁর ছেলে ইফাতকে অস্বীকার করে বলেন এ নামের ছেলেটি তাঁর নয়। পাশাপাশি ইফাতের ফেইসবুক প্রোফাইল লক করে বন্ধ করে দেওয়া হয় তার ব্যবহৃত ফোন নাম্বারটি। সেই সঙ্গে নিষ্ক্রিয় করে ফেলেন তার হোয়াটসঅ্যাপ।
কে এই মতিউর রহমান? মা বাবা ছেলের নাম রেখেছিলেন পান্নু, স্কুল সার্টিফিকেটে মতিউর রহমান, বাড়ি বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে। বেশ কয়েকবছর পূর্বের কথা উনি (পান্নু)যখন সেগুনবাগিচার অফিসের একজন বড় কর্তা বাবু তখন তার বিষয়ে খোজ পাই , খোজটা আসলে ওনার বউয়ের ক্লাশ ফাকি দেয়ার মধ্য দিয়ে আসে, ওনার স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকী তিতুমীর কলেজের একজন প্রভাষক, তিনি ক্লাশ নেন না, নিয়মিত বেতন তুলে নেন , এবিষয়ে প্রিন্সিপ্যালও কথা বলতে রাজী হননি। বর্তমানে লায়লা কানিজ লাকী নরসিংদির রায়পুরা উপজেলা পরিষদ চেয়াম্যান।
এই পান্নু ওরফে মতিউর রহমান কত হাজার কোটি টাকার মালিক, তার ছেলের জন্য অনুমান ৪ কোটি টাকার ৫ টি দামী বিলাসবহুল গাড়ির ছবি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রদর্শিত হয়েছে !
বাড়ি ফ্লাট ও প্লট সম্পর্কিত খোজ নিয়ে জানা যায় বসুন্ধারার ইস্ট ওয়েজ এর সামনে ফ্লাট, বসুন্ধরার কে ব্লকে প্লট, ডি ব্লকে ৭ তলা বাড়ি, ডি ব্লক ডেসকো অফিসের সামনে ১২ কাঠা জমি, গাজীপুর পুবাইল (টংগি কলেজগেট) এলাকায় “আপন ভূবন” নামে ৫০ বিঘা জমির ওপর স্যুটিং স্পট, শশুরবাড়ি এলাকা নরসিন্দি জেলায় সবচেয়ে বড় পার্ক রয়েছে ড্রিমল্যান্ড পার্ক সেই পার্কের মালিক ওনার স্ত্রী, ও পার্কের পাশে তিনতলা ডুপ্লেক্স বাড়ি! গুলশান ২ এ গায়িকা ইভা রহমানের ৬ তলায় ফ্লাট, সহ নামে বেনামে ওনার কত সম্পদ আর অর্থ রয়েছে তা বলা যাবে না যদি পান্নু নিজে স্বীকার না করেন।
ওরিয়েন্ট গ্রুপের সাথে কি বানিজ্য রয়েছে তাঁর ? দুটি বিলাস বহুল গাড়ি ও ড্রাইভার বছরের পর বছর তার (পান্নুর)জন্য বরাদ্ধ রেখেছে ওরিয়ন্ট গ্রুপ,এছাড়া মাসিক ভাতা প্রদান করা হচ্ছে তাকে। বাড়ির ইলেক্ট্রি মিস্ত্রী সেনেটারী মিস্ত্রি, রাজ মিস্ত্রী,রং মিস্ত্রী, থেকে শুরু করে তার কাছে কাজের টাকা পান না এমন কেউ নেই। ইট সিমেন্ট টাইলস রড ব্যবসায়ী বাকির খাতা নিয়ে ঘুরছেন তার কাছে বছরের পর বছর। টাকা তো দুরের কথা হুমকি ধামকি পুলিশে দেয়ার মতন ঘটনা অনেক!
আপনার মতামত লিখুন